অনির্বাচিতদের ক্ষমতায় আনার চেষ্টা চলছে : বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২২-০৩-২০২৫ ১২:৫২:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২২-০৩-২০২৫ ০৪:৫৭:০৭ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে বিএনপি মনে করছে, ভবিষ্যতে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োগের অযৌক্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ আইন ও নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করে একটি অকার্যকর সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। এতে নতুন কমিশনগুলোর মাধ্যমে অনির্বাচিতদের দেশ পরিচালনার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে, যা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করবে।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি ‘সংস্কার সনদ’ তৈরি করা সম্ভব, যা নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়ন করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
তিনি অভিযোগ করেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও স্প্রেডশীট বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এটি একটি পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনার অংশ, যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হতে পারে। বিএনপি ৩১ দফা ভিত্তির ওপর রাষ্ট্র সংস্কারের সুপারিশ করেছে এবং গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের মাধ্যমে এসব সংস্কার বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে সমুন্নত রেখে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যূত্থানের শহীদদের স্বপ্ন ও আকাংখা অনুযায়ী একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই বর্তমান সময়ের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সকল সংস্কার প্রচেষ্টা পরিচালিত হবে এটাই জাতীয় প্রত্যাশা।
ফখরুল অভিযোগ করেন, কমিশনের সুপারিশ ও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের মধ্যে সাযুজ্য আছে, যা প্রশ্ন তোলে যে, এটি কি সত্যিই গণতন্ত্র রক্ষার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, নাকি এটি একটি পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনার অংশ? তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আইন ও নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করে একটি নিয়ন্ত্রিত সরকারব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক চেতনাকে ব্যাহত করবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি অনেক আগে থেকেই ৩১ দফার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছে। ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই ঘোষিত এই পরিকল্পনার ভিত্তিতেই সংস্কারের পথ সুগম করা উচিত। নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই প্রকৃত সংস্কার সম্ভব, কারণ গণতন্ত্রের স্বার্থে কেবল নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।
জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি হলো বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য। এই ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো রাজনৈতিক পক্ষ যেন সুবিধা নিতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমানসহ অন্যান্য নেতারা।
বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স